‘সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিতে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে’
প্রতিবেদক, বিনিয়োগবার্তা, ঢাকা: সাম্প্রতিক সময়ে সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিভাগ থেকে বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সমন্বয়ের অভাবে বিচ্ছিন্নভাবে নেওয়া এসব উদ্যোগ থেকে কার্যকর ফল আসছে না। সাইবার নিরাপত্তায় সাফল্য পেতে সরকারের বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে সবার আগে সমন্বয় নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন এ খাতসংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।
সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে কমনওয়েলথ টেলিযোগাযোগ সংস্থার (সিটিও) উদ্যোগে গতকাল মঙ্গলবার শুরু হওয়া এক আন্তর্জাতিক সেমিনারে এমন মতামত উঠে এসেছে।
রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে শুরু হওয়া ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ: সাইবার অপরাধ, নিরাপদ ইন্টারনেট ও ব্রডব্যান্ড’ শীর্ষক এ কর্মশালা আয়োজনে সহায়তা করছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
গতকাল সকালে এ কর্মশালার উদ্বোধন করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য দেন বিটিআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আহসান হাবীব খান।
দুই দিনব্যাপী এ কর্মশালার প্রথম দিনের আয়োজনে ছিল সাইবার নিরাপত্তাবিষয়ক পাঁচটি অধিবেশন। ‘সেফটি অন ইন্টারনেট’ শীর্ষক প্রথম অধিবেশনে অংশ নিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, ‘সাইবার নিরাপত্তাবিষয়ক সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা দেশে নেই। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নিজেদের মতো করে কাজ করছে। আমাদের একে অপরের সঙ্গে কথা বলে সমন্বিতভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।’
প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যকে সমর্থন করে বিটিআরসির সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এমদাদ উল বারী বলেন, সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ে সমন্বয়ের ক্ষেত্রে বড় ধরনের সমস্যা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে সমন্বিত কর্মকৌশলে কাজ করতে হবে।
সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য অর্থ খরচকে ব্যয় হিসেবে না দেখে বিনিয়োগ হিসেবে দেখার কথা বলেন সিটিওর মহাসচিব শোলা টেইলর। তিনি বলেন, সাইবার নিরাপত্তা এখন বৈশ্বিক সমস্যা, এই সমস্যা মোকাবিলায় বিভিন্ন দেশ ও সংস্থাকে একত্রে কাজ করতে হবে।
ফেসবুকের সঙ্গে আলোচনা: অনুষ্ঠানে চলতি মাসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের সঙ্গে নতুন করে আলোচনা শুরুর তথ্য সাংবাদিকদের জানান প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। তিনি বলেন, বর্তমানে কোনো বিষয়ে জানতে চাইলে বা কোনো কনটেন্ট নিয়ে আপত্তি তুললে উত্তর দিতে ৪৮ ঘণ্টা সময় নেয় ফেসবুক। সংকটকালে এটি খুবই দীর্ঘ সময়। তাদের বোঝানো হবে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ফেসবুকের নিয়মকানুন ও নীতিমালা ভিন্ন। এ জন্য বাংলাদেশের আইনকানুন ও নীতির সঙ্গে সংগতি রেখে আলাদা ডেস্ক স্থাপনের প্রস্তাব দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ফেসবুকের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেন সরকারের তিন মন্ত্রী। এরপর গত বছরের জানুয়ারিতে সিঙ্গাপুরে ফেসবুকের এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রধান কার্যালয়ে আরেকটি বৈঠক করেন প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।
(এসএএম/ ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭)